প্রত্যয় নিউজডেস্ক: বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান বাহিনীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এই সংঘাতে কমপক্ষে আজারবাইজানের একটি হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
আর্মেনিয়া বলছে, আজারবাইজান প্রথমে বিমান ও কামান দিয়ে হামলা শুরু করেছে। পরবর্তীতে তারা সামরিকভাবে এর জবাব দেওয়া শুরু করেছে এবং সামরিক বাহিনী ওই অঞ্চলে হামলার জন্য সংঘবদ্ধ হয়েছে।
অপরদিকে আজারবাইজান বলছে, চারদিক থেকে শুরু হওয়া গোলাবর্ষণের জবাব দিয়েছে তারা। দু’পক্ষই জানিয়েছে যে, এই সংঘাতে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিতর্কিত ওই অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবেশী এই দুই দেশের মধ্যে বিরোধ চলছে। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার তারা সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দু’দেশকেই তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দু’দেশকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া। আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয় দেশই সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর তারা দু’টি স্বাধীন দেশে পরিণত হয়।
প্রায় চার দশক ধরে নাগোরনো-কারবাখ অঞ্চল নিয়ে প্রতিবেশী দেশ দু’টির মধ্যে বিরোধ চলছে। প্রায়ই এই বিরোধ সংঘাতে রূপ নিচ্ছে। এতে বহু বেসামরিক প্রাণ হারাচ্ছে। নাগোরনো-কারবাখ অঞ্চলকে আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও এটি এখনও আর্মেনিয়ান নৃগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গত জুলাইয়ে সীমান্তে দু’পক্ষের মধ্যে লড়াইয়ে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়। এর পরেই আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে বিশাল জনসমাবেশ হয় যা কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সমাবেশে বিতর্কিত ওই অঞ্চলে পূর্ণ সামরিক অভিযান এবং তা দখল করে নেওয়ার দাবি তোলা হয়।
আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে রাজধানী স্তেপানাকের্তসহ বেসামরিক এলাকাগুলোতে হামলা শুরু হয়। এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তারা এ পর্যন্ত দুটি হেলিকপ্টার, তিনটি ড্রোন ও তিনটি ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সমানুপাতিকভাবে সাড়া দেওয়া এবং পুরো পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব আজারবাইজানের সামরিক-রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দু’পক্ষের এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত এক নারী এবং এক শিশুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আরও হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পরবর্তীতে প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে আর্মেনিয়া সরকার মার্শাল ল’ এবং পুরো সেনাবাহিনী মোতায়েনের ঘোষণা দেয়। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের পবিত্র জন্মভূমিকে রক্ষায় প্রস্তুত হতে হবে। অপরদিকে, আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি গ্রামে তীব্র গোলাবর্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।